The Legend of Ram: First Contact

The Legend Of Ram Book 3 · Aritra Das
Ebook
99
Pages
Ratings and reviews aren’t verified  Learn More

About this ebook

‘রামায়ণ’-কে নতুন আঙ্গিকে ধরবার এই প্রয়াস মোটেও সহজ ছিল না। কাজটি যথেষ্টই কঠিন। সবথেকে আগে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, মূল কাব্যের সঙ্গে সাদৃশ্য কি থাকবে? এবং কতটা? যদি সাদৃশ্য অধিক হয় তাহলে গল্পের মৌলিকত্ব থাকবে না, ব্যাপারটা দাঁড়িয়ে যাবে ‘নাম-পরিবর্তন করে টুকে দেওয়া’। আবার সাদৃশ্য যদি কম হয়, তখন আবার অন্য বিপদ! মূল গল্পের সঙ্গে যদি কোন সাদৃশ্যই না থাকে, একেবারেই যদি সম্পর্করহিত হয়ে যায় গোটা ঘটনাটি তবে পুরো বিষয়টিই তো ‘খেলো’হয়ে যাবে! তাহলে আর ‘রামায়ণ’বলে বিষয়টিতে কি আর অবশিষ্ট থাকবে? ‘কল্পবিজ্ঞান’হিসেবে চালিয়ে দিলেই তো হয়, এত খাটাখাটুনি কেন?


প্রকৃতপক্ষে, এটাই সেই জায়গা যেখানে বিরাট চিন্তা-ভাবনার দরকার পড়েছে। তার আগের যে দশা,তারও তো বিস্তার কম নয়, পুরো চৌদ্দটা বছর! হাতের সামনে পুরনো খাতাগুলি খোলা রয়েছে, বিভিন্ন সময়ের বার্তাবহ এই খাতাগুলি। প্রথমদিককার খাতার পাতাগুলির যা অবস্থা তাতে মনে হয় মিশরের প্রাচীন লিপিকাররাও লজ্জা পেয়ে যাবে; হিয়েরোগ্লিফিক লিপির আদলে অজস্র কাটাকুটি সেই পাতাগুলিতে! প্রথমদিককার ব্যর্থ ঢক্কানিনাদের প্রতিধ্বণি! আর শেষেরদিকের সেই পরিত্যক্ত খাতাটি – প্রায় পুরোটা লিখে বিরক্তি সহকারে বাতিল ঘোষণা করা দশ টাকা দামের সেই সবুজ খাতা; যেটা না হলে আজকে গল্পটাকে এই অবস্থায় দাঁড় করাতেই পারতাম না!


গত পঞ্চাশ-ষাট বছরে সভ্যতার রথের চাকা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। তখন যা ভাবা যেত না, যা কল্পনাতে আনাও যেত না, আজ সেটাই বাস্তব। প্রযুক্তির বলে বলীয়ান মানুষ কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে এগিয়ে চলেছে – ভালো না মন্দের দিকে সেটা তর্কের বিষয় হয়তো, কিন্তু সংশয়াতীত ভাবে মানব সভ্যতা যে পূর্ণতার দিকে ধাবমান এই বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যদি পুরনো গাঁথাগুলিকে নতুন আঙ্গিকে দেখবার চেষ্টা করা হয়, তাতে মন্দ কি? কল্পনাতে তো কোন স্বনামখ্যাত ঐতিহা“মানুষ চোখ থাকতেও দেখে না, কান থাকতেও শোনে না; বুদ্ধি থাকলেও মানুষ তা কাজে লাগাতে চায় না” – ঐতিহাসিক উক্তিটি হঠাৎ মনে পড়ে গেল এই সূত্রে। গোটা বিশ্ব কার্যত দুইভাগ হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর মাটিতে বহির্বিশ্বের উন্নত প্রাণীদের গতিবিধির প্রশ্নে। এই মতের বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী, দুই মতাবলম্বীদের তীক্ষ্ণ যুক্তিতে ঝড় বইছে গোটা বিশ্ব জুড়ে; এই বিষয়ে যুযুধান দুই পক্ষেরই একটাই আদর্শ – ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যাগ্র মেদিনী’। কিন্তু মজার বিষয়, কোন পক্ষই কিন্তু জায়গা থেকে টলছে না, কেউই কারোর মতবাদকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিতে পারছে না! এই পরিস্থিতে দাঁড়িয়ে ‘কল্পনা বিনে গতি কি’, বিশেষ করে উপকরণ যেখানে হাতের কাছেই রয়েছে?সিকের শিলমোহরের দরকার নেই!


‘দ্যা লেজেণ্ড অফ্ রাম’-সমগ্রটির প্রথম পর্ব ‘সাইট বিয়ণ্ড সাইট’-এ মূলতঃ অনেকগুলি বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। ঐ পর্বটিতে গল্পের শুরুতেই আমরা দেখেছি আর্য ও অনার্যের মধ্যে সংগঠিত হওয়া এক ভয়ংকর যুদ্ধ, যা প্রভাব ফেলেছিল মূল মহাকাব্য ‘রামায়ণ’ –এ, অবশ্যই এই যুদ্ধটি কাল্পনিক। এছাড়াও দেবতাদের সাক্ষাতে এক লুপ্ত, বিগত যুগের ইঙ্গিতও দেখানো হয়েছিল এই পর্বটিতে, যাতে অঙ্গাঙ্গীভাবে উপস্থিত ছিলেন দেবতারা; তাঁদের দোষ-ত্রুটি, ভুল-ভ্রান্তি সমেত! এই পর্বটিতে আমরা মূলতঃ পরিচিত হয়েছিলাম মানবপ্রজাতির সমসাময়িক চরিত্রগুলির সঙ্গে; তাঁদের কর্মকাণ্ডগুলির মধ্য দিয়ে দেবতাদের সঙ্গে, তাঁদের জীবন, তাঁদের সংগ্রাম, তাঁদের পরাস্ত হওয়ার কাহিনি এবং- কিভাবে বিবর্তনের পথ বেয়ে একটি বৃক্ষচারী বানরগোষ্ঠী থেকে বর্তমান শিক্ষিত মানুষে আমরা পা রাখলাম, তার একটি সারসংক্ষেপ জেনেছিলাম আমরা এই পর্বটিতে। মূল গল্প শুরুর আগে এটিই ছিল আমাদের ভণিতা। দোষ দেবেন না, ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গাইবার চল সব দেশেই রয়েছে, তাই নয় কি?


এই সমগ্রের দ্বিতীয় পর্ব – ‘রাইজ্ অফ্ অ্যা স্পিসিজ্’-এ আমরা মূল গল্পে ঢুকে পড়েছিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল – ‘রামায়ণ’ নামক মহাকাব্যকে দুটি আলাদা সময়ের প্রেক্ষাপটে ভাগ করে নেওয়া, যাতে ঘটনার কার্যক্রম দুটি পৃথক সময়ের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে খাপও খায়, আবার এই মহাকাব্যে যে প্রযুক্তি ও নৃতত্ত্বগত বিষয়গুলির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, তারও একটি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। এই কঠিন কার্যটি করতে গিয়েই বিবর্তনের প্রথম যে অংশটির দিকে চোখ পড়ল, তা হল – ‘নিয়াণ্ডারথাল’ থেকে ‘ক্রো-ম্যাগনন’ পর্যায়ের দিকে খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে মানবগোষ্ঠীর বৃহৎ লম্ফ! ব্যাস! আর পায় কে?


দ্বিতীয় পর্বটির শুরু পৃথক সময়কালের দুই রাজপুত্রের জীবনে উঁকি দিয়ে; তাদের সমকালীন পরিস্থিতি, সামাজিক ব্যবস্থা, রাজনীতি ও অন্যান্য সকল বিষয় যা সমকালীন সময়টিকে তুলে ধরে। এই পর্বটির সূচনা এই দুই ভাইয়ের দুঃসাহসিক অভিযান দিয়ে, শেষ ভাগ্যতাড়িত হয়ে জঙ্গলে দেবতাদের একটি লুকনো আশ্রমে, লোকচক্ষুর অন্তরালে, বিতাড়িত অবস্থায়। মধ্যিখানের সমগ্র সময়টি জুড়ে দেখানো হয়েছে দুই ভাই ও তাদেরকে ঘিরে আবর্তন করা রাজনীতি, এবং অবশ্যই, বহির্বিশ্বে তাদের প্রথম পদক্ষেপ।

এবারে তৃতীয় পর্বের পালা- ‘ফার্স্ট কন্ট্যাক্ট’। এই পর্ব থেকেই গন্ধর্ব প্রজাতির দুই রাজপুত্র সপার্ষদ প্রথমবার মুখোমুখি হতে চলেছে সভ্যতার সোপানে তাদের ওপরে থাকা রাক্ষস প্রজাতির সাথে; শুরু হতে চলেছে স্বার্থের সংঘাত। রাক্ষসদের প্রভাব প্রতিপত্তি, তাদের অহংকার, তাদের আধুনিকতম প্রযুক্তি, যুদ্ধরীতি – সবকিছুর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন দুই গন্ধর্ব রাজপুত্র। ষড়যন্ত্র, প্রতিশোধ-স্পৃহা, প্রেম, বিরহ- এর সঙ্গে রয়েছে সভ্যতার সোপানে পিছনের সারিতে থাকা মানবদের সঙ্গে দুই গন্ধর্ব রাজপুত্রের সাক্ষাৎ ও একত্রে থাকা। সব মিলিয়ে, বেশ জমাটি একটি পর্ব যা আপনাদের ভালো লাগতে বাধ্য।



Rate this ebook

Tell us what you think.

Reading information

Smartphones and tablets
Install the Google Play Books app for Android and iPad/iPhone. It syncs automatically with your account and allows you to read online or offline wherever you are.
Laptops and computers
You can listen to audiobooks purchased on Google Play using your computer's web browser.
eReaders and other devices
To read on e-ink devices like Kobo eReaders, you'll need to download a file and transfer it to your device. Follow the detailed Help Center instructions to transfer the files to supported eReaders.

Continue the series

More by Aritra Das

Similar ebooks